ঘি নামটি শুনলে কারো জিভে জল আসে আবার কারো অ-রুচি চলে আসে। ঘি যার যার কাছে যেমন হোক না কেন আসলে ঘি একটি অসাধারন খাদ্য। যারা তাদের শরীরের ওজন কমাতে চাচ্ছেন তাদের সবার আগে চর্বি জাতীয় খাবার পরিহার করা প্রয়োজন তারপর গ্রীন টি খাবেন। যদিও ঘি চর্বিজাতীয় খাবার তারপরেও ঘি চলে আসছে আদিকাল থেকেই। পুষ্টিগুনের দিক থেকে ঘি এর কোন জুড়ি নেই। আসুন আজ ঘি সমন্ধে বিস্তারিত জানব।
ঘি কী
ঘি এক ধরনের চর্বিজাতীয় উপাদন। ইংরেজীতে ঘি কে বলা হয় Clarified Butter ( ক্লারিফায়েড বাটার) । এই ঘি তে রয়েছে ৯৯ দশমিক ৯ শতাংশ চর্বি ও বাকি ০১ শতাংশ থাকে জলীয় উপাদন। চর্বির মাঝে রয়েছে দ্রবণীয় ভিটামিন ও দুধের পোড়া অংশ বিশেষ। ঘি যেহেতু চর্বি তাই এটিকে যে কোন তাপমাত্রায় রাখা যায়। তবে বাহিরের তাপমাত্রায় রাখা ভাল।
ঘি কিভাবে তৈরি করা হয়
আপনার বাড়ির গবাদি পশু যেমন গরু, ছাগল, মহিষ,ভেড়ার দুধ দিয়ে ঘি তৈরি করা যায়। তবে দেশে বর্তমানে গরুর দুধ ও মহিষের দুধ দিয়ে ঘি বেশি বানানো হয়। প্রথমে দুধ থেকে বাটার ও মাখন বানাতে হবে। তারপর সেই মাখন ভালভাবে ফেটে নেওয়ার পর পানীতে দিলে ঘি তৈরি হয়ে যাবে। বেশিরভাগ সময়ে গৃহিণীরা ঘরে এভাবেই ঘি বানিয়ে থাকে। তবে অনেকেই দুধের সর দিয়ে ঘি বানিয়ে থাকেন।
ঘি এর উপকারিতা
ঘিয়ে রয়েছে নানা ধরনের উপকারিতা। ঘরে বসে তৈরিকৃত ঘি তে রয়েছে ফসফোলিপিড যাহা মানুষের স্বাস্থের জন্য খুবেই উপকারি। তবে কারখানায় বানানো ঘি তে এই ফসফোলিপিড থাকে না। ঘিয়ের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন এ,ডি,ই যাহা রোগ প্রতিরোধের পাশাপাশি অন্ত্রের স্বাস্থ ভাল রাখার জন্য সব সময় সাহায্য করে থাকে।
আপনার শরীরের হাড়, চুল ও চোখের জন্যও খুব উপকারী। তাছাড়া আপনার শরীর থেকে বিষাক্ত উপাদন দুর করতেও খুব সাহায্য করে।
একটি গবেষনায় দেখা গেছে ঘি এর মাঝে রয়েছে চর্বির গঠন, তার মাঝে রয়েছে ডিএইসএ। এই <span;>ডিএইসএ হল এক ঘরনের ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড। সাধারনত আমরা যে খাবার খাই তার থেকে খাদ্য উপাদন শোষন করতে খুব সাহায্য করে ওমেগা থ্রি। ডিএইচ এ ক্যান্সার, হৃদরোগ, ইনস্যুলিন রেজিস্ট্যান্স, আর্থ্রাইটিস ও এডিএইচডি বা এ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপারএ্যাক্টিভিটি ডিসঅর্ডার এর প্রতিরোধে সাহয্য করে।
চিকিৎসকের বিশ্বাসে ঘি কি
আয়ূর্বেদ শাস্ত্র এর মতে ঘি নানা রকম রোগ বাচিয়ে আপনার শরীরকে রাখে চাঙ্গা। এটি সমপৃক্ত চর্বির মধ্যে দ্রবণীয় পরিপোষক উপাদন শোষনে সাহায্য করে । এছাড়াও বিশ্বাস করা হয়ে থাকে যে ঘি অস্থি সংযোগে পুষ্টি যোগায় ও পিচ্ছিলকারি উপাদন সরবরাহ করে থাকে।
ঘি কিভাবে খাবেন
একজন পুষ্টিবিদ বলেন__ ঘি এর স্বাস্থগত উপকারিতা থাকছে বলে আপনি ইচ্ছেমত ঘি খেতে পারেন না। আপনাকে পরিমান মত খাওয়া উচিৎ। একজন পূর্ণ বয়স্ক মানুষ দিনে ২ চা চামচ এর বেশি ঘি খেতে পারবেন না। যদি বেশিপরিমাণ ঘি খেয়ে থাকেন তাহলে অধিক রক্তচাপ হবে। এছাড়াও যদিন ঘি খাবেন সেদিন অন্যকোন তেল জাতীয় খাবার পরিহার করতে হবে।
কারা ঘি খাবেন না
ঘি যেহেতু প্রাচিনকাল থেকে চলে আসছে তাই কারা খেতে পারবেন না তার কোন বাধা নেই। তবে আপনি যদি ডায়াবেটি, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ ও কিডনি রোগি হয়ে থাকেন তাহলে আপনি রেজিস্টার্ড ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ঘি খেতে পারেন।
ঘি এর বিকল্প উপাদন কি কি
ঘি তো ঘি… তবে এর বিকল্পও রয়েছে। ঘির এর বিকল্প হল তিল, তিসি, বাদাম তেল ( ওমেগা থ্রী ফ্যাটি এসিড) যা ঘিয়ের বিকল্প হিসেবে পাওয়া যায়।
ঘি এর ব্যবসা
বর্তমানে অনেক নারি ও পুরুষ উদ্দ্যোক্তা ঘি এর ব্যবসার দিকে ঝুকে পড়ছেন। অনেকেই ঘরোয়া পরিবেশে ঘি উৎপাদন করে তা বাজারজাত করে ভাল টাকা আয় করতেছেন। ঘি এ দেশে রয়েছে বিশাল বড় মার্কেট। আপনি যদি ভাল পণ্য উৎপাদন করতে পারেন ও মার্কেটিং করতে পারেন তাহলে আপনি ভাল আয় করতে পারবেন এই ঘি বিক্রি করে।
আজ বন্ধুরা এ পর্যন্তই, আশাকরি আপনার কাছে লেখাটি ভাল লেগেছে। আপনি আরও কিছু ধারনা নিতে ও দিতে কমেন্ট করে জানাবেন।